গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি | গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল Composition

গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি | গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল

আসালামু আলাইকুম। আজকের ব্লগের বিষয় হলো গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি, গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল, গুগল এডসেন্স এর নিয়ম, দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায় ও এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি এবং গুগল এডসেন্স এর বিকল্প কি?

গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি | গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল
গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি | গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল

হ্যালো বন্ধুরা স্বাগতম আপনাকে আমাদের আজকের এই এডসেন্স রিলেটেড পোষ্টে। আজকে আমরা এডসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত টিউটোরিয়াল জানবো। আপনি যদি এডসেন্স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আমাদের এই লেখাটি শেষ অবধি পড়বেন।


গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি

Google Adsense আসলে কি, এটা কিভাবে কাজ করে জানার জন্য গুগল এডওয়ার্ডস নামে আরেকটি বিষয় জানা প্রয়ােজন। ধরুন আপনার একটি ই-কমার্স সাইট রয়েছে ফটোগ্রাফি বিষয়ক । ফটোগ্রাফি সংক্রান্ত পন্য, ক্যামেরা ইত্যাদি বিক্রি করেন। 

আপনি সাইটের প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে চান গুগলের মাধ্যমে । আপনি গুগলের সাথে চুক্তি করলেন আপনার সাইটে ১০ হাজার ভিজিটর পাঠালে তাদের ১০ হাজার ডলার দেবেন। অর্থাত ভিজিটর প্রতি ১ ডলার । 


বিজ্ঞাপনের সাথে আপনার দেয়া শর্ত হচ্ছে ফটোগ্রাফি, ক্যামেরা ইত্যাদি শব্দ নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে কেবলমাত্র তাদেরকে আপনার সাইটে পাঠাতে হবে। এটাই এডওয়ার্ডস। অন্যকথায় নির্দিস্ট শব্দভিত্তিক বিজ্ঞাপন। 


গুগল এই বিজ্ঞাপনগুলি প্রচার করে এডসেন্স (এডচয়েজ) নামের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে এর সদস্য হতে হয় (বিনামুল্যে)। যারা ফটোগ্রাফি বিষয়ক ব্লগ রয়েছে এমন কেউ যদি সদস্য হন তাহলে তার সাইটে উল্লেখিত ফটোগ্রাফি বিষয়ক বিজ্ঞাপন দেখানাে হবে। 

যেহেতু ব্লগটি ফটোগ্রাফি বিষয়ে সেহেতু ফটোগ্রাফিতে আগ্রহি ব্যক্তি সেই বিজ্ঞাপন দেখবেন এবং সেখানে ক্লিক করে বিজ্ঞাপনদাতার সাইটে যাবেন এটাই লক্ষ । মাঝখান থেকে যার সাইটে বিজ্ঞাপনটি দেখানাে হল তিনি টাকা পেলেন গুগলের দেয়া বিজ্ঞাপন দেখিয়ে। 

তিনি টাকা পান যখন কেউ সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন সেই ক্লিক হিসেব করে । গুগল মুল বিজ্ঞাপনের কত অংশ এভাবে দেয় সেটা প্রকাশ করে না। এমনকি যারা এডসেন্স থেকে আয় করেন তারা কত আয় করেন সেটা প্রকাশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। 

তারপরও বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন গুগল তাদের চুক্তির ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ ব্লগের মালিককে দেয়। আর সফল ব্লগার লক্ষ ডলার পর্যন্ত আয় করেন একথা একাধিকবার উল্লেখ করা হয়েছে। এডসেন্স থেকে আয় কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। প্রথমত আপনাকে এডসেন্স ব্যবহারের অনুমতি পেতে হবে (পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই। 

অনুমােদন নেয়ার পরও সেটা বাতিল করার উদাহরন রয়েছে অনেক)। আয়ের জন্য ব্লগে যথেস্ট পরিমান ভিজিটর আসতে হবে এবং ক্লিক করতে হবে । ক্লিক প্ৰতি টাকার পরিমানও বিজ্ঞাপন অনুযায়ী বিভিন্ন মানের হয়। 

সাধারনভাবে বলা হয় অর্থনীতি বিষয়ক বিজ্ঞাপনে আয় বেশি, প্রতি ক্লিকে কয়েক ডলার পর্যন্ত । বিনােদনমুলক বিজ্ঞাপনে আয় কম, সাধারনত ১ ডলারের নিচে।


কোন সাইটে দামী বিজ্ঞাপন দেয়া হবে, কোথায় কমদামী বিজ্ঞাপন দেয়া হবে সেটাও নির্ভর করে গুগলের ইচ্ছের ওপর। তারা সন্তুষ্ট হলে দামী বিজ্ঞাপন দিতে পারে, অসন্তুষ্ট হলে কমদামী বিজ্ঞাপন।

গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল

এডসেন্স থেকে আয়ের কথা বলার সময় যারা সবচেয়ে ভাল করেছেন তাদের উদাহরন দেয়া হয়। যেমন বছরে লক্ষ ডলার কিংবা মাসে কয়েক হাজার ডলার। একে সাধারন হিসেব বলে ধরে নিয়ে এই পরিমান আয়ের আশা করলে হতাস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এডসেন্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা নিশ্চিত করা সম্ভব না। অনুমান করা যায় বহু লক্ষ । 

প্রতিদিন এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের মধ্যে অল্পসখ্যক ব্যবহারকারী বড় ধরনের আয় করেন, অধিকাংশই বড় ধরনের আয় করতে পারেন । কেউ কেউ হতাস হয়ে সরে যান। এর কারন একেজনের কাছে একেকরকম। কারনগুলি হতে পারে; 

১. বেশি প্রত্যাসা করা

এডসেন্স ব্যবহারের সাথেসাথে আয় আসতে শুরু করবে এটা আশা করে শুরু করা। এরপর সেই আয় না পাওয়ায় হতাস হয়ে চেষ্টা কমিয়ে দেয়া। বাস্তবে এডসেন্স থেকে সত্যিকারের আয়ের জন্য দীর্ঘদিন চেষ্টা করে যেতে হয়। 


২. বেশি ভিজিটর আকর্ষন করতে না পারা 

অনেকেই ধরে নেন তার ব্লগে বিপুল পরিমান ভিজিটর আসবে । বাস্তবে সেটা হয়না বিবিধ কারনে। আকর্ষনীয় তথ্য, প্রচারে ত্রুটি থেকে শুরু করে অন্যদের সাথে প্রতিযােগিতা সবকিছুর কারনে এমনটা ঘটতে পারে । ফল হিসেবে এডসেন্সের আয় কমে যায়।

৩. এডসেন্স সঠিকভাবে ব্যবহার না করা

আয় কম হওয়ার একটি কারন এডসেন্স ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি অনুসরন না করা । গুগল এডসেন্স সঠিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশ দিতে ত্রুটি করে না। তাদের সাইটে সব ধরনের নির্দেশ দেয়া আছে। সেদিকে দৃষ্টি না দিলে ভাল ফল পাওয়া যায় না । 

৪. গুগলের নির্দেশ না মানা 

গুগলের নির্দেশ না মানার কারনে এডসেন্সের আয় কম হতে পারে। তারা কিছু কাজ পছন্দ করে যেমন নিজস্ব উচুমানের তথ্য) আবার কিছু বিষয় অপছন্দ করে। যেমন মুল বিষয়ের চেয়ে বিজ্ঞাপনকে প্রাধান্য দেয়া, টাকা দিয়ে ভিজিটর আনার চেষ্টা করা ইত্যাদি। এসবের কারনে গুগল নিজেই আয়ের পথে বাধা সৃষ্টি করে। 


৫. এডসেন্স অনুমােদন বাতিল করা

এডসেন্স অনুমােদন বাতিল করার কারনে অনেকের পরিশ্রম বৃথা যায় । তাদের নিয়মের বড় ধরনের গড়মিল করলে তারা অনুমােদন বাতিল করতে পারে। যেমন সাইটে আপত্তিকর, আইনবিরােধী কিছু রাখা, অবৈধভাবে কিছু করার চেষ্টা করা ইত্যাদি। কি কি কাজ তারা পছন্দ করে না বা সমর্থন করে না সেবিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে তাদের সাইটে। সমস্যা হচ্ছে অনেক সময় শত্রুতামুলকভাবে একজন অন্যজনের ক্ষতি করতে পারেন এর অপব্যবহার করে । গুগল আতৃপক্ষ সমর্থনের সুযােগ না দিয়ে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়। 

৬. এলাকাভিত্তিক কারন

বিশেষ দেশ থেকে এডসেন্সে ভাল ফল পাওয়া যায় না। যেমন বাংলাদেশ। প্রথমত বাংলা ওয়েবসাইটে এডসেন্স ব্যবহারের অনুমােদন দেয়া হয় না। যদিও যে ভাষায় বিশ্বে মাত্র কয়েক লক্ষ মানুষ কথা বলেন এমন ভাষা অনুমােদন দেয়। 

এডসেন্স ব্যবহারের সুযােগ না দেয়ার কারন অনুমান করা যায়। বাংলাদেশে অনলাইনে অর্থ লেনদেন বা কেনাকাটার সুযােগ নেই। আর বিজ্ঞাপনের মুল লক্ষ কিছু বিক্রি করা । ধরেই নেয়া হয় বাংলাদেশে বিক্রির সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ থেকে গুগলের আয় হয় না বলেই তারা এদিকে দৃষ্টি দেয় না । 

আপনি ইংরেজি সাইটে (অথবা বাংলা ইংরেজি মেশানাে সাইটে) এডসেন্স অনুমােদন পেতে পারেন। সেখানেও কিছু কারনে আশানুরুপ আয় হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথমত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কম, ইন্টারনেটের খরচ বেশি বলে ব্যবহারকারী নিতান্ত প্রয়ােজনীয় যায়গা ছাড়া ক্লিক করেন না, আর কেনার সুযােগ নেই বলে কিছু কেনার জন্য আদৌ পন্যের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন না।


এডসেন্স থেকে বিপুল পরিমান আয় হবে এটা নিশ্চিত ধরে না নেয়াই ভাল। যদি এর ওপর নির্ভর করতেই হয় তাহলে এডসেন্স থেকে আয় কম হওয়ার যে কারনগুলি উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলি সম্পর্কে সচেতন থেকে করবেন। এটাই প্রত্যাসা। 

সাধারনভাবে হিসেব করা হয়, এডসেন্স থেকে সত্যিকারের আয়ের জন্য কমপক্ষে ৬ মাস চেষ্টা করে যেতে হয় ব্লগকে উন্নত করার জন্য। এরপর ভিজিটর বাড়ানাের জন্য আরাে বছর খানেক চেষ্টা করলে এই আয়ের ওপর নির্ভর করা যায় । 

দুবছর পর থেকে একে পেশার বিকল্প হিসেবে ধরা যায় । আপনার সাইট এডসেন্স থেকে আয়ের উপযুক্ত কিনা জানবেন কিভাবে ? সাধারন হিসেব হচ্ছে দৈনিক গড়ে ১০০ জন ইউনিক ভিজিটর যদি থাকে তাহলে সন্তোষজনক আয় পেতে পারেন। কাজেই আপনার প্রাথমিক লক্ষ এই পরিমান ভিজিটর আনার ব্যবস্থা করা । 

অন্যভাবে বিষয়টি দেখতে পারেন। এডসেন্স থেকে আয় করতে চান, একে শখ হিসেবে না দেখে ব্যবসা হিসেবে কল্পনা করুন। নিজেকে বলুন এটা আমার ব্যবসা। ব্যবসার জন্য যেমন পরিশ্রম করতে হয় তেমন পরিশ্রম করব । অর্থ, সময়, শ্রম কোনটাতেই ঘাটতি রাখব না। অবশ্যই সফল হবেন । এডসেন্স থেকে আয়ের মুল সুত্র উচুমানের সাইট এবং বেশি ভিজিটর । 

যদি সেখানে এডসেন্স থেকে আয় হয় তাহলে ভাল, যদি নাও হয় আপনার পরিশ্রম বৃথা যাবে না । এডসেন্সের বিকল্প কোন ব্যবস্থা কিংবা এফিলিয়েটেড মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাকে কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। অনেকে বলেন এডসেন্স থেকে এফিলিয়েটেড মার্কেটিং এর আয় অনেক বেশি, অনেক নিশ্চিত। সে বিষয়ে আলােচনা কিছুটা পরের দিকে ।

গুগল এডসেন্স এর নিয়ম

এডসেন্স আয়ের জন্য উল্লেখযােগ্য পদ্ধতি হলেও বিষয়টি একদিকে সহজ না অন্যদিকে পুরােপুরি আপনার নিয়ন্ত্রনে না। একদিকে এজন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় অন্যদিকে গুগলের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করতে হয় ।


যদি এখান থেকে আয়ে ভাল করতে হয় তাহলে দুদিকই ঠিক রাখা প্রয়ােজন। নিজের দিকটি ঠিক রাখা তুলনামুলক সহজ। কিছু নিয়ম মেনে সবকিছু ঠিক আছে কিনা যাচাই করে নিতে পারেন ।

১. আপনি ইন্টারনেট মার্কেটিং বিষয়টি কতটা বেঝেন

স্বাভাবিকভাবে ধরে নেয়া যায় আপনি এখনই এই বিষয়ে ততটা দক্ষ নন। এখনই শিখতে শুরু করুন। এবিষয়ে সহায়তা করার জন্য বহু ওয়েবসাইট রয়েছে। কিভাবে ভাল ব্লগ তৈরী করতে হয়, কিভাবে পোেষ্ট লিখলে বেশি ভিজিটর আকর্ষন করা যায় থেকে শুরু করে কিভাবে সাইটের প্রচার বাড়ানাে যায় ইত্যাদি তথ্য বিনামুল্যেই পাবেন । এদের অনেকের সদস্য হলে নিয়মিত ইমেইলের মাধ্যমে তথ্য পাবেন। সেগুলি পড়ে কাজে লাগাতে চেষ্টা করুন। আপনি যে কাজ করছেন সেটা ভালভাবে না বুঝে ভাল ফল আশা করতে পারেন না। 


২. আপনার সাইটের পরিসংখ্যানের দিকে লক্ষ রাখুন

আপনার সাইটে কি পরিমান ভিজিটর আসে, তারা কিভাবে আসে, কতক্ষন থাকে, কোন পােষ্ট বেশি। পছন্দ করে ইত্যাদি লক্ষ করুন। যে বিষয় ভিজিটর বেশি পছন্দ করেন সেদিকে বেশি মনােযােগ দিন। 

৩. এজন্য কতটুকু সময় বরাদ্দ রেখেছেন বিবেচনা করুন

আপনি বছরে লক্ষ ডলার আয় করতে চান অথচ ব্লগের জন্য দিনে মাত্র ১ ঘন্টা সময় ব্যয় করবেন এটা হতে পারে না। একজন চাকরীজীবি কিংবা ব্যবসায়ীর আয় এবং সেজন্য সময়ের কথা বিবেচনা করুন। ব্লগ থেকে আয়ের জন্যও আপনাকে ঘন্টা হিসেবে কাজ করতে হবে। এই সময় ব্লগের পােষ্ট লেখা থেকে শুরু করে তথ্য সংগ্রহ করা, ব্লগের কোথাও ভুল থাকলে সংশােধন করা করা, ভিজিটররা কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন সেগুলি বিশ্লেষন করে আরাে ভালভাবে ব্যবহার করা ইত্যাদি কাজে ব্যয় করুন। 

৪, শুরুতেই লাভের হিসেব করবেন না।

কি পরিমান সময় এবং শ্রম ব্যয় হচ্ছে তারসাথে বর্তমানের আয় তুলনা করবেন না। ধরে নিন আপনি ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়ােগ করছেন। একসময় আপনার সাইটে দৈনিক কয়েক হাজার ইউনিক ভিজিটর আসবে, তখন আপনিও বহু টাকা আয় করবেন। 


৫. এখনই শুরু করুন

এখন শুরু করলে যদি ১ বছর পর ফল পাওয়া যায় তাহলে এখনই শুরু করুন। ১ বছর পর শুরু করলে ফল পাবেন আরাে ১ বছর পর। মাঝখান থেকে অন্যরা আপনার আগে শুরু করে প্রতিদ্বন্দির সংখ্যা বাড়াবে। অকারনে সময় নষ্ট করবেন না।

এই নিয়মগুলি আপনার নিজস্ব । এরপর আপনার বিবেচনায় আনতে হবে গুগলের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়গুলি । তারা যে কাজগুলি পছন্দ করে না সেগুলি ভুলেও করবেন না। তাদের সাইটে (google.com/adsense/terms) নিয়মগুলি দেয়া আছে। 

মাঝেমাঝে সেগুলি পড়ে নেবেন । একবার পড়েছেন কাজেই তাদের নিয়ম জানেন এটা ধরে নেবেন না। বিভিন্ন সময়ে তারা আগের নিয়মে পরিবর্তন আনে, নতুন কিছু যােগ করে।

Google Adsense এর যে নিয়মগুলি মানা বাধ্যতামুলক সেগুলি একবার জেনে নিন।

১. পর্নোগ্রাফি বা প্রাপ্তবয়স্কদের সাইটে এডসেন্স ব্যবহার করা যায় না । 

২. কোন ব্যক্তি, গােষ্ঠি, প্রতিষ্ঠান, দেশ, জাতি ইত্যাদির জন্য ক্ষতিকর হয় এমন আক্রমনাত্বক বক্তব্য প্রচার করা যাবে না । 

৩. সহিংসতা ছড়াতে পারে এমন বক্তব্য প্রকাশ করা যাবে না। 

৪. কপিরাইট আইন ভংগ করে এমন কিছু রাখা যাবে না। 

৫. মাদক, মদ, সিগারেট বা এইধরনের কোন নেশাজাতিয় দ্রব্য, এমনকি ওষুধ পর্যন্ত প্রচারের কাজ করা যাবে না। 

৬. ভাইরাস, স্প্যাম, ট্রোজান ইত্যাদি প্রচার করা যাবে না । 

৭. ভিজিটরদের বিরক্ত করে এমন বক্তব্য প্রকাশ করা যাবে না। 


৮. এডসেন্স বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার জন্য ভিজিটরকে অনুরােধ করা যাবে না। কোন পােষ্টে এধরনের বক্তব্য রাখা যাবে না। 

৯, এডসেন্স বিজ্ঞাপনের ঠিক গা ঘেসে এমন কিছু রাখা যাবে না যেন এডসেন্সকে তার অংশ বলে মনে হয়। 

১০. অবশ্যই নিজে কখনাে বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন না। কোন ভিজিটর কোথা থেকে ক্লিক করেছে সেটা তারা জানে। নিজে ক্লিক করে আয় করতে চাইলে একাউন্ট বাতিল করা হয় । 

১১. কোন বিজ্ঞাপনদাতার সাথে সরাসরি যােগাযােগ করবেন না ।

১২.কোথায় ক্লিক করলে কত আয় হয় জানার চেষ্টা করবেন না । গুগলের সাইট থেকে আপনার মােট কত আয় সেটা জানতে পারেন। নিজের আয়ের তথ্য প্রকাশ করবেন না। 

১৩, এডসেন্স বিজ্ঞাপনের কোডে কোন ধরনের পরিবর্তন করা যাবে না। সামান্যতম পরিবর্তন করলে এডসেন্স বাতিল করা হবে। 

১৪. পেজ লিংক এর পাশে এডসেন্স ব্যবহার করা যাবে না। 

১৫. একজন ব্যক্তি একটিমাত্র এডসেন্স ব্যবহারের সুযােগ পাবেন। একাধিক একাউন্ট তৈরীর চেষ্টা করবেন না। সেক্ষেত্রে সবগুলি একাউন্ট বাতিল করা হবে । 

১৬. এডসেন্স একটিমাত্র সাইটের জন্য দেয়া হয়। অনুমােদন পেলে তাকে একাধিক সাইটে ব্যবহার করবেন না ।

দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়

আগে ব্লগ বা ওয়েবসাইট পরে এডসেন্স এর জন্য আবেদন এটাই নিয়ম। তারা আপনার সাইট যাচাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নেবে আপনাকে অনুমােদন দেবে কিনা। সাইট তৈরীর আগে আবেদন করতে পারেন না। কাজেই ধরে নেয়া হচ্ছে আপনার চালু ওয়েবসাইট আছে যেখানে এডসেন্স ব্যবহার করতে চান। 

১. যদি ব্লগার ব্লগ ব্যবহার করেন তাহলে ড্যাসবাের্ডে এডসেন্স এর লিংক পাবেন। সেখানে ক্লিক করলে এডসেন্স রেজিষ্ট্রেশন পেজ ওপেন হবে। যদি ব্লগার ব্যবহার না করেন তাহলে সরাসরি তাদের সাইটে যেতে পারেন (adsense. google.com/)। ।

২. তাদের ফরম পুরন করুন। সেখানে নিজের নাম এবং ঠিকানা সঠিকভাবে দিন । টাকা দেয়ার সময় আপনার দেয়া ঠিকানায় তারা মেইল করে ব্যাংক চেক পাঠাবে, কাজেই এখানে গড়মিল করবেন না। 

৩. আপনার ইমেইল দেখুন । তারা অনুমােদন দিক বা না দিক, আপনাকে মেইল করে জানাবে। 

৪. অনুমােদন দেয়া হলে আপনার এডসেন্স একাউন্টে ঢুকুন। 

৫. তাদের নির্দেশ অনুযায়ী আপনার জন্য কোড কপি করুন এবং আপনার সাইটে পেষ্ট করুন। ব্লগারে সরাসরি উইজেট হিসেবে এডসেন্স যােগ করার ব্যবস্থা রয়েছে।


এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি

এডসেন্স রেজিষ্ট্রেশনের সময় যে ঠিকানা দিয়েছেন সেই ঠিকানায় তারা আপনার নামে (সেখানে দেয়া নাম) ব্যাংক চেক পাঠাবে। সাধারন নিয়ম হচ্ছে কমপক্ষে ১০০ ডলার জমা হলে তবেই চেক পাঠানাে হয়। সাধারনত এক্ষেত্রে গুগলের পক্ষ থেকে কোন গড়মিল করা হয় না।


নাম-ঠিকানা ইত্যাদি পরবর্তীতে পরিবর্তন করা যায়। তাহলেও এগুলি শুরুতেই ঠিকভাবে দেয়া ভাল । ওয়েব সাইট যার নামে এডসেন্স টাকার প্রাপক হিসেবে সেই একই নাম ব্যবহার করুন ।

গুগল কাষ্টম সার্চ (Adsense For Search) 

এডসেন্স থেকে আয়ের বিষয়টি এতটাই জনপ্রিয় যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য ব্যবস্থাগুলি আলােচনার বাইরে থেকে যায়। এডসেন্স যেমন লাভজনক তেমনি এর কিছু সমস্যাও রয়েছে। যেমন বাংলা ওয়েব সাইটে এডসেন্স ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয় না। 

খুব সহজেই এডসেন্স অনুমােদন বাতিল করা হয়। অথচ তাদেরই আরেক ব্যবস্থা এডসেন্স ফর সার্চ ব্যবহারের সুযােগ পাওয়া যায় তুলনামুলক সহজে। যদি কোন কারনে আপনাকে এডসেন্স ব্যবহারের অনুমতি না দেয়া হয় তাহলে সেটা জানানাের সময় নিশ্চিতভাবেই এডসেন্স ফর সার্চ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হবে । 

এডসেন্স ফর সার্চ এর আরেকটি সুবিধে হচ্ছে আপনার যদি ওয়েবসাইট না থাকে তাহলেও সেটা ব্যবহার করতে পারেন। আপনার নিজস্ব একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরী হবে এবং সেটা গুগলের নিজস্ব ওয়েবসাইটে থাকবে। এর নাম গুগল কাষ্টম সার্চ (Google Custom Search)। 

তৈরী করার সময় সার্চ ইঞ্জিনের একটি নাম দেবেন, কোন বিষয়গুলি সার্চ করার সুযােগ দেবেন সেগুলি কিওয়ার্ড হিসেবে উল্লেখ করবেন। সাধারনভাবে আপনি যে বিষয়ে ভিজিটর পেতে আগ্রহি (আপনার ব্লগের বিষয়) সেই বিষয়ে কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। 

যখনই ব্যবহারকারী সার্চ করবেন এবং সার্চ রেজাল্টের ওপর ক্লিক করবেন তখন আপনার একাউন্টে টাকা যােগ হবে। এডসেন্স ফর সার্চ দুধরনের হয়, বিনামুল্যের ষ্ট্যান্ডার্ড এডিশন এবং অতিরিক্ত সুবিধা সম্বলিত বিজনেস এডিশন। ষ্ট্যান্ডার্ড এডিশন হিসেবে শুরু করে পরবর্তীতে বিজনেস এডিশনে আপগ্রেড করতে পারে।


ষ্ট্যান্ডার্ড এডিশনে সবসময়ই বিজ্ঞাপন দেখা যায়, বিজনেস এডিশনে বিজ্ঞাপন ছাড়া সার্চ রেজাল্ট দেখা, সার্চ রেজাল্টের এক্সএমএল ফিড, ইমেইল সাপাের্ট, গুগল চেক-আউটের মাধ্যমে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি সুবিধে রয়েছে।

যেভাবে কাষ্টম সার্চ রেজিষ্টার করবেন;

১. তাদের সাইটে যান (wWw.google.com/coop/manage/cse/create/1) 

২. আপনার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের নাম, বর্ননা, ভাষা ইত্যাদি তথ্য দিয়ে ফরম পুরন করুন। 

৩. What do you want to search? অপশনে Only sites I select সিলেক্ট করুন। 

৪. Select some sites অংশে আপনার সাইটের ঠিকানা দিন। একাধিক সাইট থাকলে সেগুলি ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। 

৫. আপাতত বিনামুল্যে ব্যবহারের জন্য free standard edition সিলেক্ট করুন। 

৬. Next বাটনে ক্লিক করে সার্চ ইঞ্জিন পরীক্ষা করে নিতে পারেন। 

৭. Get code ট্যাবে যান। সেখানে কয়েকলাইন কোড পাবেন। এটা কপি করুন এবং সেখানে দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী আপনার সাইটে পেষ্ট করুন।

ভিজিটর যখন এই সার্চবক্স ব্যবহার করবেন এবং সার্চ রেজাল্টে ক্লিক করবেন তখন আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে । এডসেন্স ফর সার্চ ব্যবহারের জন্য এডসেন্স এর নিয়মগুলি ছাড়াও অতিরিক্ত কিছু নিয়ম মানতে হয় ।

এডসেন্স ফর সার্চ ব্যবহারের নিয়মগুলি হচ্ছে;

১. এটা ব্যবহারের সময় একই সাইটে অন্য কোন সার্চ সার্ভিস এর ব্যবস্থা রাখা যাবে না। 

২. শুধুমাত্র সার্চবক্স (বা এডসেন্স) ব্যবহারের জন্য পেজ তৈরী করা যাবে না। যেখানে ব্যবহার করবেন সেখানে অবশ্যই আপনার নিজস্ব তথ্য থাকতে হবে। 

৩, রেজিষ্ট্রেশনের জন্য পেজ, চ্যাট পেজ ইত্যাদিতে ব্যবহার করা যাবে না ।

এডসেন্স অথবা এডসেন্স ফর সার্চ যাই হােক না কেন, এর নিয়মকানুন অনেক । ব্লগ তৈরী করে সাথেসাথে এগুলি ব্যবহারের দিকে দৃষ্টি না দিয়ে নিয়মগুলি বিশ্লেষন করুন, বােঝার চেষ্টা করুন। একবার ভুল করলে সেটা সংধােন করার সুযােগ নাও পেতে পারেন।

গুগল এডসেন্স এর বিকল্প | গুগল অ্যাডসেন্স এর বিকল্প, চিতিকা 

গুগল বিশ্বের শীর্ষ ধনী কোম্পানীগুলির একটি। ইন্টারনেট ব্যবসার ক্ষেত্রে অন্যরা তারথেকে অনেক পিছিয়ে। এটাও হয়ত জানেন এই কোম্পানী তুলনামুলক নতুন। অন্তত এর প্রধান প্রতিদ্বন্দি ইয়াহু কিংবা মাইক্রোসফট এর তুলনায়। 

প্রশ্ন থাকতে পারে তারা যখন এডসেন্স থেকে বিপুল পরিমান আয় করছে তখন অন্য কোম্পানীগুলি এধরনের। ব্যবস্থা চালু করছে না কেন ? উত্তর হচ্ছে, অন্য কোম্পানীগুলি চেষ্টা করেছে, এখনাে করছে। তাদের পক্ষে গুগলের সাথে পেরে ওঠা সম্ভব হয়নি তাদের সার্চ ইঞ্জিনের সাফল্যের কারনে। 

কেউ যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন গুগল তার ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরন পর্যালােচনা করে। তার পছন্দের বিষয়, কেনাকাটার ধরন ইত্যাদি বিশ্লেষন করে তারসাথে মানানসই বিজ্ঞাপন তাকে দেখতে দেয়া হয়। 


ফলে বিজ্ঞাপনে সাফল্যলাভের সুযােগ বেশি। বিজ্ঞাপনদাতারা এই বিষয় পছন্দ করেন। অন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলি এখানেই পিছিয়ে রয়েছে গুগল থেকে এবং সেকারনেই তাদের বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক বিজ্ঞাপনদাতা আকর্ষন করতে পারেনি। 

ব্যবহারকারীরাও বেশি আয় করতে পারেননি বলে আগ্রহ কম দেখান। তাদের নেটওয়ার্কগুলি সকলের কাছে গ্রহনযােগ্য না হওয়ার কারনে সীমাবদ্ধতাও বেশি। এরই মধ্যে চিতিকা নামে একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। একে এখনই এডসেন্স এর সাথে তুলনা করতে পারেন না। অন্তত এডসেন্স এর মত আয় চিতিকা থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপরও এর কিছু সুবিধে রয়েছে।

১. এডসেন্স থেকে চিতিকার অনুমােদন পাওয়া তুলনামুলক সহজ। যে কোনসাইটের জন্যই আবেদন করতে পারেন। যদি কোন কারনে এডসেন্স অনুমােদন না পান তাহলে চিতিকা ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারেন ।

২. এডসেন্স এবং চিতিকা দুটি বিজ্ঞাপন একই সাইটে ব্যবহার করা যায় । একের সাথে অন্যের বিরােধ নেই। 

৩, ব্লগার ব্লগে গুগল এডসেন্স সরাসরি চিতিকা বিজ্ঞাপন যােগ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া অন্য সাইটে যােগ করার জন্য কোড তাদের সাইটে পাওয়া যবে ।

যাদের এডসেন্স ব্যবহারের সুযােগ নেই তারা অন্তত চিতিকা ব্যবহার করতে পারে। ব্যবহারের জন্য তাদের সাইটে গিয়ে সাইটের তথ্য এবং নিজের নাম-ঠিকানা দিয়ে ফরম পুরন করতে হয়। ব্যবহারের নির্দেশ তাদের সাইটে দেয়া আছে।

তারা মেম্বারশিপকে দুভাগে ভাগ করে। আপনার সাইটে যদি দৈনিক ৫ হাজার আমেরিকান ভিজিটর যায় তাহলে গােল্ড মেম্বারশিপ । সেক্ষেত্রে আপনি দামী বিজ্ঞাপন পাবেন। এর কম হলে সিলভার মেম্বারশিপ। সেক্ষেত্রে ক্লিকপ্রতি আয় কম হবে।


তাদের সদস্য হওয়ার পর তাদের লিংক প্রচার করেও আয় করা যায়। তাদের সাইট থেকে কোড কপি করে ব্লগে ব্যবহার করুন। সেখানে তাদের ব্যানার বিজ্ঞাপন দেখা যাবে। সেখানে ক্লিক করে কেউ সদস্য হলে তিনি যা আয় করবেন তার কিছু অংশ পাবেন। তারা টাকা দেয় ব্যাংক চেক এর মাধ্যমে, ফলে টাকা পেতেও সমস্যা নেই। 


কত টাকা জমা হলে আপনি চেক পেতে চান সেটা ঠিক করে দিতে পারেন আপনার প্রােফাইলে। চিতিকার মুল লক্ষ আমেরিকা, বৃটেন, কানাডা, ভারত ইত্যাদি দেশ। এসব দেশের ভিজিটরকে টার্গেট করে ওয়েবসাইট করলে ভাল করার সম্ভাবনা বেশি। আয়ের মূলমন্ত্র এডসেন্স এর মত একই । ভিজিটর যত বেশি, ক্লিক তত বেশি, আয় তত বেশি। তাদের ঠিকানা : WWW.chitika.com

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি | গুগল অ্যাডসেন্স টিউটোরিয়াল

আমরা এতক্ষন জানলাম গুগল এডসেন্স একাউন্ট কি, গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়, গুগল এডসেন্স এর নিয়ম, দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়, এডসেন্স থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি, গুগল এডসেন্স এর বিকল্প, গুগল অ্যাডসেন্স এর বিকল্প। আশা করি আমাদের আজকের এই আরটিকেল টি তোমাদের ভালো লেগেছে।

Next Post Previous Post