মোবাইল ফটোগ্রাফি টিপস | মোবাইল ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম
আপনি কি মোবাইল ফটোগ্রাফি টিপস বা মোবাইল ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম খুজতেছেন? যদি মোবাইল ফটোগ্রাফি টিপস বা মোবাইল ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম খুজে থাকেন তাহলে স্বাগতম জানাই আপনাকে। কারন আমরা আজকে ফটোগ্রাফি নিয়ে কিছু কথা যেগুলো হবে ফটোগ্রাফি শিখুন বা কিভাবে ফটোগ্রাফি শিখবো এসব বিষয় আলোচনা করব।
আসসালামু আলাইকুম আমি আজকে ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল বা ফটোগ্রাফার হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। তো চলুন বন্ধুরা জেনে নিই মোবাইল ফটোগ্রাফি টিপস বা মোবাইল ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম গুলো।
মোবাইল ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম |
ছবি তােলার প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র
প্রথমে আমরা যারা ছবি তােলা শুরু করব, তাদের ছবি তােলা জন্য আসলে ক্যামেরা ছাড়া আর কোন কিছুরই দরকার নেই খুব একটা। তবে পারফেক্ট শট নেওয়ার জন্য আমরা কিছু জিনিস ব্যবহার করতে পারি, যা আমাদের এগিয়ে রাখবে একধাপ।
আর আমি মনে করি, আমরা ছবি তােলার সময় যে জিনিসগুলাে ব্যবহার করব, তা সম্পর্কে আমাদের ছবি তােলার আগেই একটু জেনে নেওয়া দরকার। তাহলে আমাদের সবার জন্যই সুবিধা হবে।
ক্যামেরা
ফটোগ্রাফি নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমাদের আলােচনা করতে হবে ক্যামেরা নিয়ে। আমাদের মনে রাখতে হবে, একটা ভাল ক্যামেরা কিন্তু একটা ভালাে ফটোগ্রাফার তৈরী করে না, একজন ভাল ফটোগ্রাফার একটা ক্যামেরাকে ভালােভাবে ব্যবহার করেন।
আসলে ফটোগ্রাফিটা একটা আর্ট, আমরা যা প্রতিদিন দেখি, তা মানুষকে একটু অন্যভাবে দেখানাের আর্ট, মানুষকে একটু অন্যভাবে চিন্তা করানাের আর্ট।
ফটোগ্রাফিকে আমরা যদি রান্নার সাথে তুলনা করি, তাহলে আমাদের ক্যামেরাকে আমরা তুলনা করব চুলার সাথে। আপনি ভাল রাঁধতে পারেন, এর মানে কিন্তু এই না যে আপনি একটা ভাল চুলা ব্যবহার করেন।
অবশ্য ক্যামেরা একেবারে খারাপ হওয়াটাও আমাদের জন্য ভালাে হবে না। যে চুলা ঠিকভাবে জ্বলেই না, তা দিয়ে আমরা ভাল রাঁধতে পারব না। মেগাপিক্সেলের ক্ষেত্রে আমি বলব, ৫ মেগাপিক্সেল বা তার উপরের ক্যামেরা মােবাইল ফটোগ্রাফির জন্য ভাল।
ট্রাইপড
ট্রাইপডের ব্যবহার আমাদের ছবিকে করবে স্টেবল। কম শাটার স্পিডে বা লং এক্সপােজারে(এটা কি জিনিস তা আমরা একটু পরেই জানব) ছবি তােলার ক্ষেত্রে এটা কিন্তু অনেক দরকারি একটা জিনিস। লং এক্সপােজারে ট্রাইপড দিয়ে ছবি না তুললে আমরা ছবি তােলার পর প্রায় সময় দেখব ছবি ব্লার হয়ে গেছে। আর কোন ছবি যদি ব্লার হয়ে যায় তাহলে আমাদের সেই ছবি তােলা আর না তােলা একি কথা হয়ে যাবে। হ্যাঁ, এইখানে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, অনেক ফটোগ্রাফারই তাে ছবি তুলতে ট্রাইপড ব্যবহার করেন না। তাহলে আমি কেন করব?
ভাল কথা, আমরা যদি ওই ফটোগ্রাফারদের দিকে দেখি, তাহলে দেখব যেগুলাতে ব্লার হওয়ার সম্ভাবনা আছে তার সবই তারা ট্রাইপড ব্যবহার করে তুলেছেন।
ট্রাইপড আসলে কোন সময় ব্যবহার করতে হবে, তা নিয়ে একটু পরেই বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে।
লেন্স
লেন্স বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। আমি মূলত মােবাইলের লেন্স নিয়ে কথা বলব। কারণ ফটোগ্রাফিতে যারা নতুন,যারা সাধারণত শখের বশে ফটোগ্রাফি করি, তারা মােবাইল কেই ব্যবহার করি ছবি তােলার জন্য। তাই আমরা এইখানে ক্যামেরার লেন্স নিয়ে কথা না বলে মােবাইলের জন্য ক্যামেরার লেন্স নিয়ে কথা বললে সবার জন্যই ভালাে হবে।
টেলিফটো লেন্স
এসব লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বড়। আমরা যখন অনেক দূরের কোন কিছুর ছবি তুলতে চাইব, তখন আমরা এই লেন্স ব্যবহার করব। আমরা হয়ত চাঁদের ছবি তুলতে গিয়ে খেয়াল করেছি, পূর্ণিমার চাঁদ ক্যামেরায় এসে হয়ে যায় আলােক বিন্দু।
আমাদের চিরকালীন দুঃখ, মােবাইলে এই চাঁদ বা দূরের গাছে বসে থাকা পাখি বা কোন জিনিসের ছবি তুলতে না পারা। আমরা কাছে গেলেই পাখি উড়ে যায়। আবার ফোনে ডিজিটাল জুম থাকায়, আমরা যদি জুম করি, তাহলে আমদের ছবি ফেটে একাকার হয়ে যায়।
এই সমস্যা সমাধান করবে আমাদের টেলিফটো লেন্স। আমরা এই লেন্স দিয়ে অনেক দূরের জিনিসের ছবি তুলতে পারব।
উপরের ছবিটার মত ছবি আমরা সহজেই তুলতে পারি টেলিফটো লেন্স ব্যবহার করে।
ওয়াইড-এঙ্গেল লেন্স
আমরা আমাদের তাকানাের সময় চোখের কোন পরিবর্তন না করে যতটুকু দেখি(চোখ না ঘুড়িয়ে যতটুকু দেখি), এসব লেন্স দিয়ে তার থেকে বড় জায়গা দেখতে পাই।
সাধারণত কোনাে রুমে বা বদ্ধ জায়গায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে এমন ছবি তুলতে গেলে আমরা দেওয়ালের কারণে পিছিয়ে যেতে পারি না। এইসব ক্ষেত্রে আমাদের কাজে দিবে এই ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স। এই লেন্স দিয়ে আমরা অনেক বড় জায়গা একসাথে ফ্রেমে নিয়ে আসতে পারব।
ম্যাক্রো লেন্স
ছােট কোন জিনিসের ছবি কাছ থেকে তােলার ক্ষেত্রে বা ম্যাক্রো ফোটোগ্রাফি করার সময় আমরা এইসব লেন্স ব্যবহার করব। আমরা অনেকেই হয়ত খেয়াল করেছি যে, ফোনে। ক্যামেরার খুব কাছের কোন জিনিসের, যেমন পিপড়া বা ছােট কোন জিনিসের ছবি তুলতে গেলে তা ব্লার হয়ে যায়। এই লেন্স ব্যবহার করে আমরা খুব কাছ থেকে এইসব জিনিসের ছবি তুলতে পারব।
আমাদের অনেকের মনে হতে পারে, আমরা তাে ক্যামেরায় ছবি তােলার সময় একটু জুম করে নিলেই পারি। তাহলে আমাদের ম্যাক্রোলেন্সের আর কি দরকার? আমাদের আসলে দরকার ছবির কোয়ালিটি। ছবি আলাদা লেন্সে না তুলে জুম করে তুললে ছবির কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যাবে। তাই আমাদের এই ম্যাক্রো লেন্স দরকার।
ফিশআই লেন্স
ফিশআই লেন্স দিয়ে অনেকটা গােল গােল ছবি তােলা যায়। সাধারণত কোন ডেয়ারিং ছবি, যেমন মােটরসাইকেলে স্টান্ট বা কোনাে লাফালাফির ছবি এই লেন্স ব্যবহার করে তুলতে তাতে সাবজেক্টের সাহসী আর প্রানবন্ত ভাবটা ফুটে ওঠে আরাে বেশি পরিমানে।
এইসব লেন্সের ভিউ এঙ্গেল থাকে মােটামুটি ১৮০ ডিগ্রি। মানে, আমরা এইসব লেন্সের মধ্যে দিয়ে আমাদের বাম হাত থেকে ডান হাতের মাঝের সব কিছু দেখতে পারব। আমাদের এই ক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, এই লেন্স দিয়ে ছবি তুললে, ছবিতে পাশের দিকে, আমরা ছবিতে ডিস্টর্শন, মানে পাশের দিকে আমাদের ছবির অনেক বেশি বিকৃতি ঘটবে। এই জিনিসটা নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকা প্রয়ােজন।
ক্যামেরা কিভাবে ধরব
ক্যামেরা নিয়ে কাজ করার আগে, আমাদের এইটা জানা উচিত, যে কিভাবে ক্যামেরা ধরলে অনেকে ক্যামেরা হাতে ধরার সময় ক্যামেরার লেন্সের নিচে হাত না দিয়ে দুইপাশে ধরার চেস্টা করেন, যার কারণে ছবি স্টেবল হয় না।
আবার, ক্যামেরাকে লম্বালম্বিভাবে ধরার সময় অনেকে নিচে থেকে ধরেন,(ছবিতে যেভাবে দেখানাে হয়েছে, তার উল্টাভাবে) উপরে থেকে ধরার বদলে, নিচে থেকে ধরলে ক্যামেরার স্ট্যাবিলিটি কমে যায়, ছবি তােলার সময় একটু ঝাকুনি লাগতে পারে। এই জিনিসটা নিয়ে আমাদের একটু সতর্ক থাকা প্রয়ােজন।
আর যখন আমরা মােবাইলে ছবি তুলব, তখন আমাদের ক্যামেরাকে দুই হাত দিয়ে ধরে আমাদের দেহের কাছাকাছি রাখার চেস্টা করব। তাহলে আমাদের ছবি সবচেয়ে স্টেবল হবে।
কম্পজিশন
ধরেন, আপনি আম খাচ্ছেন আর আম খেতে খেতে আপনার ছবি তােলার ইচ্ছে হল। তাে এখন আপনাকে প্রথমে কি ঠিক করতে হবে? আপনি আসলে কার ছবি তুলতে চান। আপনি চাইলে আম, প্লেট, সামনে থাকা চামচ সব একসাথে নিয়ে ছবি তুলতে পারেন, আবার চাইলে শুধু আমের ছবি তুলতে পারেন। আপনি যে জিনিসের ছবি তুলতে চান তাই হল আমাদের সাবজেক্ট। সাবজেক্ট হিসাবে কাকে রাখবেন তা একেবারে আপনার ব্যাপার। সাবজেক্ট হতে পারে একজন মানুষ, হতে পারে ফুল, আম বা আম খাওয়ার জন্য ব্যবহার করা চামচ। মানে আপনি যার ছবি তুলছেন, সেই হচ্ছে আপনার সাবজেক্ট।
এরপর আপনাকে চিন্তা করতে হবে আপনি ছবিতে কিভাবে আপনার সাবজেক্টকে রাখবেন বা ছবিতে এলিমেন্টগুলােকে (ছবিতে থাকা। জিনিসপত্রকে) কিভাবে সাজাবেন। এই সাজানাের জিনিসটাই হচ্ছে কম্পােজিশন।
ছবি তােলা আসলে পুরাটাই রান্নার মত একটা ব্যাপার। কি রান্না করবেন, কি পরিমানে মশলা-পাতি দিবেন তা আপনার ব্যাপার। তবে আপনার এই মশলার পরিমানের উপরই নির্ভর করবে রান্না কেমন হবে।
ছবি তােলার ক্ষেত্রে কম্পােজিশন হল এই রান্নায় মশলার পরিমানের মত। সঠিক পরিমানে হলে রান্না যেমন অসাধারন হয়ে উঠবে, একইভাবে, কম্পােজিশন ভাল হলে ছবি হয়ে উঠবে অসাধারন। ছবি তােলার ক্ষেত্রে ভাল দৃশ্যের বা সুন্দর জিনিসপত্রের কোন প্রয়ােজন নেই। ভাল কম্পােজিশনই, মানে ছবির জিনিসগুলােকে ভালােভাবে সাজাতে গুছাতে পারা ছবিকে করে তুলবে। অসাধারণ।
খুব সহজ কথায় বলতে গেলে, ছবিতে বা ফ্রেমে কি কি থাকবে, কিভাবে থাকবে, মানে কিভাবে সাজানাে থাকবে, তাই হচ্ছে কম্পােজিশন।
আমরা হয়ত অনেক সময় খেয়াল করেছি, আমাদের কাছে হয়ত অনেক সুন্দর একটা জায়গা আছে, কিন্তু আমরা ছবি তুলতে গেলে ছবি ভাল হচ্ছে না, আবার অন্য কেউই সেই একই জায়গার ছবি তুলছে অসাধারণভাবে। তাহলে আমাদের ছবি ভাল হচ্ছে না কেন? কেন আরেকজনের ছবি আমাদের কাছে অসাধারণ লাগছে?
একটা ভাল ছবি দেখে হয়ত আমাদের মনে হচ্ছে “আরে ! এই ছবি তাে আমিও তুলতে পারতাম, এইভাবে যে তােলা যাবে তা আগে খেয়াল করিনি”-এই জিনিসটা আসলে হচ্ছে ছবির কম্পােজিশনের কারনে।
প্রথমে ভাল কম্পােজিশন টেকনিক না জানার কারনে অনেক ফটোগ্রাফারের ছবি ভাল হয় না। কম্পােজিশন যাতে ভাল হয়, আমাদের ছবিতে আমরা যাতে আমাদের সাবজেক্ট আর বাকী জিনিস ভালােভাবে সাজাতে পারি, তাই আমরা কিছু রুল ফলাে করব। প্রথমদিকে খেয়াল রাখতে অসুবিধা হলেও, এসব রুল ফলাে করলে আমাদের ছবি হয়ে উঠবে অসাধারণ।
আর একটু খেয়াল করলেই দেখব, ভাল ফটোগ্রাফারের সব ছবি ই কিন্তু এইসব রুল ফলাে করে। আর ছবি তুলতে তুলতে এইসব রুল মেনে ছবি তুলতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাব।
ভাল কম্পােজিশন শিখতে পারা কিন্তু বলতে গেলে ভাল ছবি তােলার অর্ধেক। ভালাে ছবির জন্য কিন্তু জটিল কম্পােজিশনের কোন দরকার নেই। সিম্পল কম্পােজিশনের মাধ্যমেই আমাদের ছবি হতে পারে অসাধারণ।
আমরা এই বই পড়তে পড়তে আস্তে আস্তে কিছু বেসিক নিয়ম বা রুল শিখতে থাকব, দেখব কোথায় একটা রুল কাজ করে, আবার দেখব কিভাবে আমরা রুল ভেঙ্গেও ছবিকে অসাধারণ করতে পারি।
কম্পােজিশন সিম্পল রাখা
আমাদের ছবিতে কোন জিনিসটা থাকলে আসলে ছবিকে ভালাে লাগবে? যত বেশি জিনিস ছবি তত ভাল? আশা করি আমরা যারা ইতিমধ্যে দুই একটা ছবি তুলেছি, তারা এটা বুঝতে শুরু করেছি যে, দুনিয়ার সব কিছু, হাবিজাবি যত জিনিস আছে, তাদের সবাইকে ছবিতে না এনে, আকর্ষনীয় ভাবে জিনিসপত্র ছবিতে রাখতে পারলেই ছবি অসাধারণ হয়ে উঠে।
আমরা ছবি তােলার সময় চেস্টা করব, যেন কম্পােজিশন থাকে সিম্পল। কম্পােজিশন সিম্পল না হয়ে অনেক জটিল হলে, ফ্রেমে অনেক জিনিস থাকলে, দর্শকের চোখ সাবজেক্ট বরাবর না থেকে পুরাে ফ্রেম জুড়ে ঘুরতে থাকে, যা আমাদের কাম্য নাও হতে পারে।
ছবিকে অনেক বেশি জিনিস দিয়ে জটিল করে ফেলায় ছবি দেখতেও হবে হিজিবিজি, দেখতে হবে দৃষ্টিকটু।
দৃশ্য বা কম্পােজিশন সিম্পল হলে আমাদেরকে এই বিষয় নিয়ে এত চিন্তা করতে হবে না। ছবিতে সাবজেক্টই থাকবে আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু। আর এই সিম্পল কম্পােজিশনের মাধ্যমেই আমরা পারব সরাসরি সাবজেক্টের কাছে দর্শককে পৌছে দিতে।
আমাদের ছবি তােলার মূল লক্ষ্য কিন্তু একটা জিনিসকে দর্শকের সামনে আকর্ষনীয় ভাবে তুলে ধরা। আমাদের দর্শক জানেই না যে আমাদের ছবি তােলার পরিবেশ, তা থেকে আমরা কি কি বাদ দিয়েছি। তাই একটা ভালাে ছবি তুলতে গিয়ে আমাদের আশেপাশের কিছু জিনিস বাদ পরে গেলেও আমাদের এত চিন্তা করার কিছুই নেই।
রুল অফ থার্ড
জন থমাস স্মিথ এক রাতে বসে বসে ছবি আঁকছেন। ছবিগুলাে তার পছন্দ হচ্ছে না। সাবজেক্টকে একবার বামে আরেকবার ডানের পাশে রেখে ছবি আঁকলেন। না, বেশি পাশে চলে গেছে। একপাশে চলে যাওয়ায় ফোকাস ঠিকভাবে হয়নি। আবার ছবি আঁকলেন। তবে এবার সাবজেক্টকে রাখলেন মাঝখানে। না এবার ও ভাল লাগল না তার কাছে। ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে ছবিগুলি। মাথা পুরােপুরি খারাপ হয়ে গেছে স্মিথ সাহেবের। না! ছবি ঠিকভাবে না আঁকতে পারলে তার ঘুম ও হবে ভাল মত। ছবি আঁকা বাদ দিয়ে তিনি চিন্তা করতে লাগলেন কিভাবে ছবি আকলে তিনি ফোকাস ঠিকভাবে সাবজেক্টে রাখতে পারবেন। উনি দেখলেন, কোন ফ্রেমকে উনি যদি সমান তিন ভাগে লম্বালম্বি আর তিন ভাগে পাশাপাশি ভাগ করেন তাহলে নিচেরটার মত যে নয়টা ঘর হয়,
তাতে ভাগ গুলার ছেদবিন্দু বরাবর কোন জিনিস রাখলে তাতে ফোকাস হয় সবচেয়ে বেশি। মানে, নিচের লাল দাগ দেওয়া বিন্দু গুলােতে আমাদের ফোকাস থাকে সবচেয়ে বেশি।
গ্রিড অন করে নেওয়ার পর আমরা নিশ্চয়ই স্ক্রিনে দাগ দেখতে পেয়েছি।
কোন পাহাড় বা সমুদ্র, বা কোন মানুষ, যখনই আমরা ছবি তুলব, আমরা এই রুল অফ থার্ড মেনে ছবি তােলার চেস্টা করব। আমাদের কাছে যদি দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ থাকে, তাহলে আমরা চেস্টা করব, যেন আমরা আমাদের গ্রিডের লম্বা লম্বি দুইটা ছেদ বিন্দু বরাবর আমাদের মানুষকে রাখতে পারি।
আমরা যখন ছবি তুলব, তখন আমরা অনেক সময় দেখব যে আমাদের কাছে আকাশ দেখতে ভাল লাগছে আবার অনেক সময় আমাদের কাছে আকাশের নিচের ছবিই ভালাে লাগবে। এই সময় আমরা চেস্টা করব, যদি আকাশ দেখতে ভাল হয় তাহলে গ্রিডের ২/৩।
আকাশ রাখতে আর, যদি আকাশ আমাদের কাছে ভালাে না লাগে, তাহলে ছবি তােলার সময় ১/৩ আকাশ রাখতে। ছবিতে যেই জিনিসটা বেশি অংশ জুড়ে থাকবে, সেই অংশটা ছবিতে গুরুত্ব বেশি পাবে।
এসব ছবি তােলার সময় আমরা ছবিতে বিশেষ
দরকার না থাকলে কখনাে দিগন্তরেখা ছবির মাঝামাঝি রাখার চেস্টা করব না (আকাশ আর মাটির জন্য সমান জায়গা রাখব না)। তাহলে ছবি দেখতে ভাল লাগবে না।
রুল অফ থার্ড ভাঙ্গা যখন আমরা আমাদের ছবিতে সিমেট্রি পাব। (ছবির দুইপাশে দেখতে অনেকটা একইরকম হলে) বা রিফ্লেকশন পাব, তখন ছবির মাঝখানে আমাদের সাবজেক্ট রাখা যেতে পারে, তাহলে আমরা আমাদের ছবিতে ভালােভাবে জিনিসটা তুলে ধরতে পারব। নাহলে আমাদের ছবিতে সিমেট্রি ভালােভাবে বােঝা যাবে না।
রুল অব ওড
ফটোগ্রাফির আর একটি রুল হল, রুল অফ অড বা বেজোড়ের নীতি। এই রুল অনুসারে, ফ্রেমে যদি সাবজেক্ট বিজোড় সংখ্যায় থাকে, মানে ১,৩,৫,৭ এইভাবে থাকে, তাহলে ছবিটা দেখতে সাবজেক্ট জোড় থাকলে যত ভালাে লাগত, তার চেয়ে বেশি ভালােলাগে। আমরা চেস্টা করব, যেন আমরা ছবি তােলার সময় আমাদের সাবজেক্টের সংখ্যা বিজোড় রাখতে পারি।
আমাদের কাছে যদি কম সাবজেক্ট থাকে, তাহলে রুল অফ অড মেনে ছবি তােলা হলে আমাদের কাছে মাঝে থাকা জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে, মানে, আমরা এই রুল অফ অড ব্যবহার করে কোনাে জিনিসকে গুরুত্বপূর্ণ
হিসাবে আবার কোনাে জিনিসকে কম গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপস্থাপন করতে পারব। জোড় সংখ্যায় যদি কোনাে জিনিস থাকে তাহলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। আমাদের কাছে যদি উপরের তিনটা ফুলের জায়গায় ২টা ফুল থাকত, তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক দুইটাকে প্রায় সমান গুরুত্ব দিত।
ছবিতে লাইনের ব্যবহার
আমরা আমাদের ছবিতে কি চাই? যাতে দর্শকের ভালাে লাগে, আমরা আমাদের সাবজেক্টের কাছে দর্শককে দ্রুত পৌছাতে পারি। নাকি? আমাদের ছবি যে দেখবে, সে যদি সহজেই বুঝতে পারে, আমরা আসলে ছবিতে কাকে দেখাতে চাইছি বা কাকে বােঝাতে চাইছি, তাহলে আমাদের ছবি দেখে দর্শকের ভালাে লাগবে, ছবিটা হয়ে উঠবে দৃষ্টিনন্দন।
লিডিং লাইন
আমরা আমাদের ছবির দর্শকের দৃষ্টি নিয়ে খেলা করব। দর্শক কি দেখবে, কি দেখবে না, কোথায় ফোকাস করবে, কোথায় ফোকাস করবে না, সব আমরাই ঠিক করে দিব।
যেই লাইন গুলাে আমাদের চোখ বা দৃষ্টিকে ছবিতে আমাদের সাবজেক্টের কাছে পৌছে দিবে, তাদেরকে আমরা বলব লিডিং লাইন।
লিডিং লাইন আমাদের সাবজেক্টে ফোকাস করতে সাহায্য করবে। লিডিং লাইন দিয়ে কোন সাবজেক্টে বা কোন এলিমেন্টের কাছে আমাদের দর্শককে পৌছে দেওয়া হবে অনেক সহজ, এই লাইন আমাদের দৃষ্টিকে গাইড করবে।
আমরা যখন লিডিং লাইন ব্যবহার করব, তখন যদি আমরা ছবির পাশের দিক থেকে সাবজেক্টের কাছে লাইন দেখাই, তাহলে তা আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালাে হবে। কারণ, আমরা যখন ছবির দিকে তাকাই, তখন সাধারণত পাশ থেকে ছবির মাঝের দিকে তাকাই। নিচের ছবি দেখলেই আশা করি বিষয়টা পরিস্কার হবে।
আমরা ছবিটার দিকে তাকালেই নিশ্চয়ই বুঝতে পারি, এই রাস্তার পাশের লাইনগুলাে লিডিং লাইন তৈরী করছে, যার কারণে আমাদের সাবজেক্টের কাছে পৌছানাে সহজ হয়েছে।
কোনাে ছবিতে লিডিং লাইন না থাকলে আমাদের কাছে ছবিটাকে মনে হবে আগােছালাে, দর্শকের জন্য ছবির সাবজেক্ট খুজে পাওয়া লিডিং লাইন থাকলে যেমন সহজ হত তেমন সহজ হবে না।
সবসময় আমাদের যে সােজা লাইন ব্যবহার করতে হবে তা কিন্তু না। আমরা আঁকা বাকা লাইনও ব্যবহার করতে পারব।
আমাদের মনের উপর বিভিন্ন ধরনের লাইনের প্রভাব
একজন ফটোগ্রাফারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ছবিতে মনের ভাল যথাযথভাবে ফুটিয়ে তােলা। আমাদের সবার চেস্টা থাকবে, এমনভাবে ছবি তােলা যেন“ছবি কথা বলে”। আমাদের আর ছবির দর্শকের মাঝে একমাত্র যােগাযােগের মাধ্যম হবে আমাদের তােলা ছবি। দর্শকের মনকে নিয়ন্ত্রন করতে হলে, আমাদের জানতে হবে, কোন জিনিস আমাদের বা দর্শকের মনে কি প্রভাব রাখে।
আনুভূমিক ও উলম্ব লাইন
আমরা আনুভুমিক আর উলম্ব লাইনের ব্যবহার করব মূলত শান্ত আর স্থির ভাব প্রকাশ করতে। আমরা উপরের ছবিটা দেখলে আশা করি এই শান্ত ভাব বুঝতে পারছি। আবার একটা উদাহরণ হিসাবে বলা যায় শান্ত সমুদ্রের ছবি যখন তুলি তখন আকাশ আর সমুদ্রের মাঝে কিন্তু একটা আনুভুমিক লাইন তৈরি হয়। এই লাইনে কারনেই কিন্তু সমুদ্রের শান্তভাবটা ফুটে উঠে। আর এই লাইন আর না থাকলে শান্ত ভাবটা ফুটিয়ে তােলা কঠিন হত ।
আমদেরকে আনুভুমিক বা হরাইজন্টাল লাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে, তা হল, হরাইজন্টাল লাইন গুলাে যেন। ফ্রেমের সাথে ঠিকমত লেভেল করা থাকে। পরে ছবির এডিট করার সময় আমরা লাইন। সােজা করতে পারলেও দেখব, আমাদের ফ্রেমের বা ছবির কিছু অংশ কাটা পরে গেছে, যার কারণে আমাদের ছবির সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার ক্যামেরার গ্রিডলাইন আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে।
আমাদের ছবিতে আনুভুমিক লাইন, তা হােক সমুদ্রের তৈরি, বা অন্য কিছু দিয়ে, না থাকলে আমাদের ছবি থেকে একটা শান্ত ভাব কমে যাবে বা শান্ত ভাব বােঝা যাবে না। যা আমরা উপরের এই ছবি দেখে হয়ত খুব ভালাে ভাবেই বুঝতে পারছি।
এখানে হয়ত অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে যে, আমাদের ছবিতে লাইন না থাকার পরেও তাে ছবিটা সুন্দর হয়েছে। তাহলে লাইনের এই অংশটা পড়ার মানে কি?
আচ্ছা, আমরা একটু চিন্তা করি, আমাদের ছবি কে সুন্দর বা অসাধারণ করতে হলে কি আমাদের ছবিতে শান্ত ভাব আনতে হবে? এর উত্তর নিশ্চয়ই না। আমাদের ছবির শান্ত একটা ভাব আমাদের ছবির দর্শকের মনকে শুধুমাত্র শান্ত করবে। এই কারনে আমাদের শান্ত সমুদ্রের ছবি দেখতে ভালাে লাগে। আবার আমাদের এইটাও মনে রাখা দরকার, মানুষ কিন্তু ভয়ঙ্কর ঝরণা বা সমুদ্রে এডভেঞ্চারও পছন্দ করে। আমরা এই বইয়ে এই জিনিসটাই শিখব, যে কিভাবে আমরা একটা জিনিসকে ব্যবহার করতে পারি, ছবিতে কোন জিনিসটা আমাদের ছবির দর্শকের মনে কোন অনুভূতি দিবে।
কোন ছবিতে আমরা যখন কোন কিছুর শক্তিমত্তা, ক্ষমতা, বিশালত্ব এগুলাে প্রকাশ করতে চাইব, তখন আমরা ব্যবহার করব উলম্বা লাইন। উলম্ব লাইন কোন ছবিতে খুব ভালভাবে সাবজেক্টের ক্ষমতা ফুটিয়ে তুলবে। আবার উলম্ব লাইনও আমাদের ছবিতে একটা শান্তভাব এনে দিতে পারে।
কার্ভ লাইন বা বক্র রেখা
কার্ভ লাইন ফলাে করতে মস্তিষ্কের অনেক সময় লাগে। তাই আমরা যদি চাই ছবি যে দেখবে সে ছবিটা অনেকক্ষন ধরে দেখুক, তাহলে আমরা এই লাইনের সাহায্য নিব। এই লাইন একজন দর্শককে অনেকক্ষণ ধরে ছবি দেখতে বাধ্য করবে। এর মাধ্যমে একটা বক্ররেখা বরাবর দর্শকের চোখকে গাইড করানাে যায়।
আমরা ছবি তােলার সময় একটু খেয়াল রাখলেই, এমন অনেক লাইন পেয়ে যাব।
উপরের ছবিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, কিভাবে আমরা আমাদের সাবজেক্ট, বা পাখি এবং পাখির পাখা ব্যবহার করে আমাদের কাংখিত ডায়াগােনাল লাইন বা তীর্যক রেখা তুলে ধরতে পেরেছি, যা আমাদের ছবিতে গতিশীলতা ফুটিয়ে তুলেছে, ছবিকে করে তুলেছে প্রানবন্ত।
আমাদের কাছে ডায়াগােনাল লাইন না থাকলে আমরা আমাদের সাবজেক্ট বা মডেলের বসার ভঙ্গি এবং আমাদের ক্যামেরা এঙ্গেল পরিবর্তন করে ডায়াগােনাল লাইন বানিয়ে নিতে পারি।
রুল অফ স্পেস
স্পেস বা জায়গা নিয়ে জানার আগে আমরা পজিটিভ আর নেগেটিভ স্পেস কি জিনিস তা জানলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। ছবিতে যে
জায়গায় সাবজেক্ট থাকে বা দেখার মত জিনিস থাকে, কোন কাজ বােঝা যায়, তাকে আমরা বলব পজিটিভ স্পেস। আর ছবির যে অংশ খালি থাকে, মানে আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, যেখানে আমরা তেমন কাজ ফুটিয়ে তুলব না, তাকে আমরা বলব নেগেটিভ স্পেস।
ধরি আমার এক বন্ধু মাঠে দৌড়াদৌড়ি করছে, আর আমি তার ছবি তুলছি, তার মানে, ছবিতে যেই জায়গা জুড়ে সে আছে, তা হবে আমাদের পজিটিভ স্পেস, আর সে ছাড়া যে বাকি মাঠটা থাকবে, তা হবে আমাদের নেগেটিভ স্পেস। উপরের ছবিতে ডলফিনটা যেই জায়গায়
আছে, তা হচ্ছে আমাদের পজিটিভ স্পেস আর বাকিটা নেগেটিভ স্পেস।
ছবিতে আমাদের সাবজেক্টের সামনের দিকে বা সাবজেক্ট যেইদিকে তাকিয়ে আছে সেইদিকে যদি আমরা নেগেটিভ স্পেস রাখি, সাবজেক্টের পিছনে না রেখে, তাহলে আমাদের ছবিতে গতিশীলতা ফুটে উঠবে যথাযথভাবে, আর দেখতেও ভালাে লাগবে। যা উপরের ছবিটার দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারছি।
কিছুক্ষণ আগে আমি আমার এক বন্ধুর কথা বলেছিলাম, যে দৌড়াদৌড়ি করছিল। এই জিনিসটার ছবি তােলার সময় যদি আমি , সে যেই দিকে দৌড়ে যাচ্ছে, সেদিকে খালি যায়গা বেশি রাখি, মানে আমাদের সাবজেক্টের সামনের দিকে বা মুখের দিকে, তাহলে ছবিটা আমাদের কাছে ভালাে লাগবে, দেখে সাবজেক্টের কাজটা বােঝা যাবে।
আমরা যদি এমন একটা ভাব প্রকাশ করতে চাই, যে আমাদের সাবজেক্ট কোনাে জিনিস থেকে দূরে চলে যাচ্ছে, এমন জিনিস প্রকাশে, আমরা সাবজেক্টকে ডানে আর যার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে তাকে বামে রাখব, সাবজেক্টের মুখের দিকে নেগেটিভ স্পেস না রেখে তার পেছনে রাখব। তাহলেই আমাদের ছবিতে এই দূরে চলে যাওয়ার কাজটা সবচেয়ে ভালােভাবে বােঝা যাবে।
একটা উদাহরণ দিলে জিনিসটা আরাে পরিস্কারভাবে বােঝা যাবে।
আমি আমার এক বন্ধুর ছবি তুলছিলাম,যে এতক্ষণ একটা গাছের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, এখন সে গাছটা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। এই সময় আমি চাইলাম তার এই গাছকে পিছনে রেখে চলে যাওয়ার জিনিসটার একটা ছবি তুলতে। আমি কিভাবে তুলব?
এইসব ছবি তােলার সময়, গাছকে বামে রেখে, যার ছবি তুলছি তাকে ডানদিক দিয়ে ফ্রেমের বাইরে চলে যাচ্ছে এমন একটা ছবি তুললে জিনিসটা সবচেয়ে ভালাে লাগবে।
আরেকটা কথা এখানে বলে রাখা দরকার, তা হল, আমরা আমাদের ছবিতে অনেক বেশি নেগিটিভ স্পেস আর একেবারে কম পজিটিভ স্পেস রেখে কিন্তু একাকিত্ব আর ক্ষুদ্রতার ভাব জাগাতে পারি।
প্যাটার্ণ
আমরা কোন জিনিসে সাধারণত প্যাটার্ণ দেখতে পছন্দ করি, প্যাটার্ণ থাকলে আমাদের কাছে ছবিকে লাগে আরাে আকর্ষণীয়।
ফটোগ্রাফিতে আমাদের চেস্টা থাকবে, যেন কোন জিনিসকে যেভাবে দেখতে আমাদের কাছে ভালাে লাগে, সেইভাবে তুলে ধরতে পারি। তাই আমাদের সবসময় চেস্টা থাকবে, যেন আমরা ছবিতে প্যাটার্ণ ব্যবহার করতে পারি।
আমাদের মস্তিষ্ক সবসময় বিভিন্ন জিনিসে প্যাটার্ণ খুজতে চেস্টা করে, কোন ছন্দ খুজতে চেস্টা করে। আমরা যদি আমাদের ছবিতে প্যাটার্ণ ব্যবহার করি, আমাদের মস্তিস্ক ছবিতে ছন্দ খুজে পাবে। এই কাজে আমাদের সাহায্য করবে কোনকিছুর রিপিটেশন বা কোন কিছু বার বার ব্যবহার হওয়া।
আমরা রং, টেক্সচার, লাইন এগুলাে ব্যবহার করেও প্যাটার্ণ তৈরী করে নিতে পারি।
ছবিতে রিপিটেশনের ব্যবহার
আচ্ছা আমরা সবাই নিশ্চয়ই গান শুনতে খুব পছন্দ করি। আমরা কি কখনাে চিন্তা করেছি, আমাদের কাছে একটা গান বা এর সুর কেনাে ভালাে লাগে?
একটু খেয়াল করি, গানের সুরে একটা রিপিটেশন থাকে। এক লাইনের সাথে অন্য লাইনের সুরের একটা মিল থাকে। যদি গানের এক লাইনের সুরের সাথে অন্য লাইনের সুরের মিল না থাকত, সুর গুলাে কাছাকাছি না থাকত, তাহলে কি আমাদের কাছে গান ভালাে লাগত? নিশ্চয়ই আমাদের কাছে তেমন ভালাে লাগত না। এই মিল থাকার ব্যাপারটা কিভাবে কাজ করে?
পর পর লাইনগুলােতে একই রকম জিনিস বার বার আসছে। রিপিটেশন বা পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তাই আমাদের কাছে গান বা কবিতা ভাল লাগছে। আমরা যখন ছবি তুলব, তখন যদি আমরা আমাদের ছবিতে কোনােভাবে রিপিটেশন নিতে আসতে পারি, তাহলে তা দেখতে আমাদের ভালাে লাগবে।
গানের ক্ষেত্রে সুর যেভাবে কাজ করে, ছবির কম্পােজিশনের ক্ষেত্রে রিপিটেশনের কাজও কিন্তু একই রকম। যেকোন জিনিসের রিপিটেশন, যেমন রং, রেখা, টেক্সচার, যাই
হােক না কেন, একটা প্যাটার্ণ বানায়, আর এই প্যাটার্ণের কারনে কোন জিনিস দেখতে আমাদের আকর্ষণীয় লাগে।
আবার অনেকসময় রিপিটেশন ব্যবহার করে। আমরা একেবারে অন্য কোন তথ্য তুলে ধরতে পারি।