১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর ।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর |
১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি হৃদয়ে জাতীয়তাবোধের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল । কালক্রমে তা বৃহৎ শক্তির রূপ ধারণ করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি বিজয় লাভ করে। পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়, অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিবাদ প্রকাশের মাধ্যমে ১৯৭০ সালের নির্বাচন। ১৯৬৯ মালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল ১৯৭০ সালের নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলে ।
→ ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত বিজয় লাভ করেন। নিম্নে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্লেখ করা হলো :
১. জাতীয়তাবোধ পুনর্জাগরণ : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলে বাঙালি জাতির জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হয়। বাঙালি জাতি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার শপথ নেন। পূর্ব পাকিস্তানের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭০ সালের নির্বাচন এত বেশি প্রভাব ফেলে যার ফলে পরবর্তীতে তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। ১৯৭০ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় লাভ করে ।
২. বাঙালির মধ্যে ঐক্যবোধ গড়ে ওঠে : বাঙালিরা একসাথে ঐক্যবদ্ধ হবার সুযোগ পায়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে। বাঙালি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে বাঙালি ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় হয় ।
৩. শেখ মুজিবুরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায় : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলে শেখ মুজিবুর জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচয় লাভ করে। শেখ মুজিবুর আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয় ।
৪. পশ্চিমা একক কর্তৃত্বের অবসানের ইঙ্গিত : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে। এর ফলে পাকিস্তানের শাসনক্ষমতায় আওয়ামী ভাগ বসায়। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা এতদিন এককভাবে শাসন করে আসছিলেন। আওয়ামী লীগ বিজয় লাভের পর এই ক্ষমতা অবসানে ইঙ্গিত প্রদান করে ।
৫. রাজনৈতিক সংঘাত সৃষ্টি : ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংঘাত সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা দেখা যায়। আওয়ামী লীগের নিকট পরাজিত হবার পর ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা নিয়ে টালবাহানা করেন। শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা না দিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলেন।
৬. বাঙালিকে সংগ্রামী করে : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিকে সংগ্রামী জাতিতে পরিণত করে। বাঙালিরা পাকিস্তানি অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস জোগায়। বাঙালি ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেন। এই নির্বাচনে বিজয় লাভের মাধ্যমে বাঙালি বিশ্বে স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে পরিচিত হয় ।
৭. জাতীয়ভিত্তিক ক্ষমতা লাভে ব্যর্থতা : আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে, কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানে কোনো আসন পায়নি। তেমনি পাকিস্তান পিপলস পার্টি পূর্ব পাকিস্তানে কোনো প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারেনি।
পিপিপি পশ্চিম পাকিস্তানে ৮৮টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের কোনো রাজনৈতিক দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে পারেনি।
উপসংহার : পুরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ সহজ করার জন্য সংকল্প করেন । এই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
বাঙালি জাতির একতা প্রমাণিত হয়। বাঙালি জাতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা লাভের যোগ্য অধিকার অর্জন করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।